কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে কমরভোগ গ্রামের বসতঘরের বারান্দার ছোট কক্ষ থেকে সাবিনা আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) সকালে কটিয়াদী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কমরভোগ গ্রামের বসতঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় তার শয়ন কক্ষে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলাকেটে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
সংবাদ পেয়ে কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এম,এ জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এবং সকালে লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত সাবিনা আক্তার কটিয়াদী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কমরভোগ গ্রামের সৌদি প্রবাসী দ্বীন ইসলামের স্ত্রী।
জানা যায়, মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) রাত অনুমান সাড়ে ১১টার দিকে বাবার বসতঘরের বারান্দার ছোট্ট কক্ষে সবিনা আক্তার ঘুমিয়ে ঘুমাতে যান। ভোরে সাবিনার পিতা ফুল মিয়া নামাজ পড়তে ঘর থেকে বের হলে, মেয়ের কক্ষের দরজা খোলা দেখতে পান। এতে তিনি কিছুটা অবাক হন। ফুল মিয়া সাবিনা সাবিনা বলে ডাকতে ডাকতে তার কক্ষে প্রবেশ করেতেই রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখে তিনি চিৎকার শুরু করেন। পিতার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন।
নিহতের পিতা ফুল মিয়া জানান, তার চার মেয়ের মধ্যে সাবিনা সবার ছোট। সাবিনাকে তার বড় ভাইয়ের ছেলে সৌদি প্রবাসী দ্বীন ইসলামের সাথে ৩ বছর পূর্বে বিয়ে দেন। সাবিনা তার বসতঘরের বারান্দার ছোট কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। তার মেয়েকে কে বা কারা হত্যা করেছে তা খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
নিহতের মা মদিনা বেগম বলেন, বিয়ের পর সাবিনার স্বামী বিদেশ চলে যায়। মেয়েকে স্বাবলম্বী করার জন্য তিনি সেলাই কাজের প্রশিক্ষণ নিতে বলেন। মেয়েও আগ্রহ নিয়ে সেলাই কাজের প্রশিক্ষণ নিয়ে জামা কাপড় সেলাইয়ের কাজ শুরু করে। গত রাতেও সে কিছু সেলাই কাজ করে রাত ১১টার দিকে তাকে সাথে নিয়ে টয়লেট সেরে তার কক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে থাকে।
তবে কে বা কারা কিভাবে দরজা খোলেছে তা বুঝে উঠতে পারছেন না। তিনি ধারণা করছেন, টয়লেটে যাওয়ার পর ধারালো অস্ত্র নিয়ে চুপিসারে কেউ হয়তোবা তার কক্ষে লুকিয়েছিল। সবাই ঘুমিয়ে পড়লে গভীর রাতে মেয়েকে হত্যা করে তার  পরিহিত দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার সহ মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এম,এ জলিল আশা প্রকাশ করে বলেন, নিহতের মোবাইল ফোনের সর্বশেষ কল লিস্টের তথ্য উদঘাটন করলে হয়তো প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে। নিহত সাবিনা নিজেই দরজা খুলেছিল না কি কোন দুর্বৃত্ত পূর্বে থেকে পরিকল্পিত ভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখে প্রকৃত অপরাধীকে সনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ আরও জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।