কুলিয়ারচরে ৩৪ পূজামন্ডপে ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গাপূজা
মোঃ আলী সোহেল, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
সায়ংকালে চিন্ময়ী আনন্দরূপিণী দেবীর বোধন ও ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। করোনার মহামারি সহ সব ধরনের অশুভ ও অমঙ্গল থেকে মুক্তি লাভই এবার দেবীর কাছে ভক্তদের প্রার্থনা। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী দুর্গা আসছেন ঘোড়ায় চড়ে আর যাবেন দোলায় চড়ে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় দূর্গোৎসবের সকল প্রস্তুতি শেষে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় মোট ৩৪টি পূজামন্ডপে আজ (১১ অক্টোবর) সোমবার থেকে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। শান্তিপূর্ণভাবে এ উৎসবটি পালন করার জন্যে এরই মধ্যে কয়েক স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পূজামন্ডপগুলো আনন্দ ঘন পরিবেশে মন্দির কমিটির উদ্যোগে প্যান্ডেল, গেইট, তোরণ ও আলোকসজ্জা সহ বিভিন্ন ধরনের সাজ-সজ্জায় সাজানো হয়েছে।
দুর্গোৎসবকে শান্তিপূর্ণ করতে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তালিকা তৈরি করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহ অনুদান বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি পূজামন্ডপে রয়েছে কয়েক স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গত বছরের ন্যায় এ বছরও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে পালন করা হবে দুর্গোৎসব। উপজেলা পূজা উৎযাপন কমিটি সভাপতি এ্যাডভোকেট মনমথ চন্দ্র দাস জানান, এবছর কুলিয়ারচর উপজেলায় পৌরসভাসহ ৬ টি ইউনিয়নে মোট ৩৪টি পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। এর মধ্যে পৌরসভা এলাকায় ১২ টি, সালুয়া ইউনিয়নে ৮ টি, রামদী ইউনিয়নে ৫ টি, উছমানপুর ইউনিয়নে ৩ টি, ছয়সূতী ইউনিয়নে ৩ টি, ফরিদপুর ইউনিয়নে ২ টি ও গোবড়িয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নে ১ টি পূজা মন্ডুপে পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ২টি প্রতিমা বেশী হচ্ছে।
সকল প্রস্ততি শেষে পঞ্চমী তিথিতে মা দুর্গাদেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মাধ্যমে ঢাক-ঢোল, কাঁশি, বাঁশি বাজিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। যা আগামী ১৬ অক্টোবর সকালে প্রতিমা বিসর্জ্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট মনমথ চন্দ্র দাস ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নন্দলাল দাস জানিয়েছেন, গতবারের তুলনায় এবার ২টি পূজা বেশী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত উপজেলার কোন মন্ডপে অপ্রীতিকর কোন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সর্বত্রই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে যে সমস্ত মন্ডপগুলিতে লোক সমাগম বেশী হবে এবং বাজার কেন্দ্রীক সেগুলিকে অতিগুরুত্বের সাথে দেখার জন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারা।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ইতোমধ্যে এলাকায় পুলিশী টহল জোরদার ও মন্ডপগুলোতে নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি মন্ডপ কমিটির স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে মন্ডপ পাহারা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।