লালমনিরহাটের আদিতমারীতে ড্রাগন চাষে সফলতা পেয়েছেন মোঃ আজিজার রহমান সরকার (বাদল)। তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। বছর খানেক আগে শুরু করা বাগান ভরে গেছে ফুল ও ফলে। আশেপাশে ড্রাগনের আর কোন বাগান না থাকায় প্রতিদিনই ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের চরিতাবাড়ি গ্রামে মোঃ আজিজার রহমান সরকার (বাদল)-এর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ড্রাগন বাগান নিজ হাতে পরিচর্যা করছেন তিনি। বাগান নিয়ে কথা হলে তিনি জানান, ৮ শতক জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করেছেন। ৩ বছর আগে (২০১৭ সালে) বিটিভিতে শাইখ সিরাজের কৃষি-দিবানিশি অনুষ্ঠানে ড্রাগন চাষের প্রতিবেদন দেখে তিনি আগ্রহী হয়ে উঠেন। ২০১৮ সালে নীলফামারীর ডোমার থেকে চারা সংগ্রহ করে ৮ শতক জমিতে ৫৩ টি পিলার স্থাপন করেন। ৩২ টি পিলারে গাছ বসিয়ে নিয়মিত ফল পাচ্ছেন। আর বাকি পিলারে কিছুদিনের মধ্যেই চারা রোপণ করবেন বলে তিনি জানান। প্রতি পিলারে ৪টি করে ড্রাগন ফলের চারা রোপন করেন। চাষকৃত জায়গায় বাগান করতে খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। রোপনের ১ বছর পর গত জুন মাস থেকে গাছে ফুল ও ফল ধরতে শুরু করেছে। চলতি বাজার দরে প্রতি কেজি ফলের মূল্য ৪০০/৫০০ টাকা। প্রতিটি ফলের ওজন প্রায় ৫০০গ্রাম। চলতি বছরে প্রায় সবকটি গাছেই ফল এসেছে। এই বাজার দর অনুযায়ী ভালো ফলন হলে বাগান থেকে বছরে ২৪০০০ টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন। তবে কিছুদিন পর তিনি আরও বেশি টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। ফল বিক্রির পাশাপাশি বাগানে প্রায় ৪শত চারা উৎপাদন করেছেন তিনি। স্থানীয় বাজারে চারার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিটি চারার মূল্য ১০০ টাকা দরে তিনি ৪০ হাজার টাকার চারা বিক্রি করতে পারবেন। শুধু লাল প্রজাতির ড্রাগন ফল রয়েছে বাগানে। উনার এই বাগান দেখে অনেকেই ড্রাগন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
তিনি আরও জানান, ড্রাগন বাগান করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তবে একবার বাগান গড়ে তুলতে পারলে ২৫ বছর পর্যন্ত একটানা ফলন পাওয়া যায় এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়।
ড্রাগন একটি ক্যাকটাস প্রজাতির উদ্ভিদ। এর ফল সুমিষ্ট ও পুষ্টিকর যার রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এ ফলে রয়েছে ব্যাপক আয়রন ও এন্টিঅক্সিডেন্ট। প্রতিকূল আবহাওয়ায় ড্রাগন টিকে থাকতে পারে। ড্রাগনে রোগ বালাই নেই বললেই চলে। ড্রাগন একটি লাভজনক চাষ।
এই গাছের ফুলগুলো সবজি আকারে খাওয়া যায়।
