নিজস্ব প্রতিবেদক(সিলেট): ভবিষ্যৎ বিশ্বে অনিশ্চিত বাঙালি জাতির অবস্থান। বাঙালি আজ নিজেই বাংলা ভাষার সাথে পরিচিত নয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাংলা ভাষা সম্পর্কে কী জানবে সেটাই এখন ভাববার বিষয়। আদৌ প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষা ঠিকে থাকবে নাকি, যেরকমটা বলা হচ্ছে বাংলার সাথে ইংলিশ এটা হচ্ছে বাংলিশ কিংবা ইংলিশের ভিতরে বাংলা ব্যবহার মানে ইংলা এরকম কিছুর আড়ালে আবৃত হয়ে যাবে বাংলা ভাষা।
বাংলা ভাষার আন্দোলনের নেপথ্যে যেসব কারণ খুঁজে পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আরবি অক্ষরে বাংলা লিখতে বলা হয়েছিল। তা মেনে নিলে আজকে ”আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি” না বলে বলতে হতো ‘আমার সুনার বানলা আমি তুমাই বালুবাসি’। কারণ বাংলা ৫০ টি বর্ণ আর আরবি ২৯ টি বর্ণ। আবার বাংলা ভাষায় ধ্বনি সংখ্যা প্রায় ৩০ টি আর আরবিতে ধ্বনি সংখ্যা ১৭ টি। আর আজকে যেভাবে ইংরেজি বর্ণমালা দিয়ে বাংলা লেখা হচ্ছে তাতে এই একই কারণে হারিয়ে যাবে বাংলা ভাষা।
বর্তমান সমাজে আমরা সবসময় আধুনিক খুঁজে বেড়াই। মানে যে বেশি ইংরেজি বলতে পারে, বাংলা আর ইংরেজি এক করে প্রমথ চৌধুরীর জগাখিচুড়ী পাকিয়ে দিতে পারে তার বাকভঙ্গি আমাদের ভালো লাগে। অথচ একসময় প্রবন্ধ লিখে এসবের প্রতিবাদ করা হয়েছে।
আবার বর্তমানে আমরা বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে বাংলা সঙ্গীত উপেক্ষা করে বিদেশে সঙ্গীত পরিবেশন, উপস্থাপন করি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদেশি চলচ্চিত্র আর প্রামাণ্য অনুষ্ঠান দেখি, তাতে করে মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছে আমাদের সমৃদ্ধ সাহিত্য। আমরা ভুলে গেছি আমরা কাজী নজরুল আর রবি ঠাকুরের উত্তরসূরী।
আজ সময় এসেছে পুনর্জাগরনের। আজ সময় এসেছে নতুন করে সচেতনতা মূলক সভা সমাবেশ করার। আজ সময় এসেছে নতুন করে পূর্ণ উদ্যমে বাংলা সাহিত্যে চর্চা করার। আজ সময় বাঙালি সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখার। আজ বড় প্রয়োজন, বাঙালি জাতিসত্তা রক্ষা করার আয়োজন।