মিরসরাইয়ে অগ্নিকান্ডে ২৫ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত! দুই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
আকতার হোসেন, মিরসরাই থেকে…
মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে ২৫ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত হয়েছে। বুধবার (৩ মে) দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার দিকে উপজেলার জোরারগঞ্জ বাজারের প্রজেক্ট রোড়ে জে.বি স্কুল সংলগ্ন হাজী মোঃ ইদ্রিস বলি মার্কেটে এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, জুয়েল বৈদ্য’র বিমল টিম্বার, জামশেদ (ফার্নিচার), কাশেম (ফার্ণিচার), বাবু (নকশার দোকান), বাবলু (ফার্নিচার), জামাল (ফার্নিচার), মনিরুল (সাব্বির গ্লাস), সাইফুল (ফার্ম্মেসী), নাজিম উদ্দিন (মোটরসাইকেল ওয়ার্কশপ), কালু (সবিতা মেটাল, গিয়াস (কুলিং কর্ণার), শ্যামল দেওয়ানজি (অফিস), দেবু (ডিমের দোকান), গফুর (চায়ের দোকান), মঞ্জুর (সাউন্ড সিষ্টেম), মহিউদ্দিন (কুলিং কর্ণার), তাহের মোল্লা (রাইচ মিল), সরোয়ার (কুন্দার মেশিনের দোকান), চন্দ্র (টেইলারিং দোকান), হাসান (নকশার দোকান), যতন (সেলুন), জসিম (কুলিং কর্ণার), আকাশ (কুলিং কর্ণার), নুর আলম (চায়ের দোকান) উল্লেখযোগ্য।
কালু’র সবিতা মেটাল এর ওয়েল্ডিং মেশিনের বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে অতি অল্প সময়ের মধ্যে অন্যান্য দোকান গুলো পুড়ে ছাই হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেন ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারেরা।
ক্ষতিগ্রস্ত বিমল টিম্বারের স্বত্বাধিকারী জুয়েল বৈদ্য জানান, রাত ১১ টা ৫৫ মিনিটে আগুন লাগার পরে ১২ টা ০৫ মিনিটে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি ততক্ষণে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত হয়ে যায়, এতে আমার প্রায় ছয় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন ক্ষতিগ্রস্ত ফার্নিচার দোকানী জামশেদ আলম। তিনি বলেন আমার প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সাউন্ড সিস্টেম ব্যবসায়ী মোঃ মঞ্জু’র জানান, ৮ লক্ষ টাকা ঋণ করে সাউন্ড সিস্টেম কিনেছিলাম এখন আমার সব শেষ।
ইদ্রিস বলি মার্কেটের পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, আমাদের মার্কেটে ছোট বড় দোকান ও সেগুলোর শাখা সহ প্রায় ৩৪ টি দোকান রয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সবগুলো দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট আসতে আধঘন্টার বেশি সময় লাগে যার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী নজরুল ইসলাম জানান, রাত ১১ টা ৫৫ মিনিটে ওয়ার্কশপ থেকে আগুন জ্বলে উঠে এবং মুহূর্তে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে একে একে সবগুলো দোকান পুড়ে যায়।
অগ্নিকাণ্ডের পর জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তার পরবর্তীতে জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাষ্টার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সমবেদনা জানান এবং সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মীরসরাই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন অফিসার ইমাম হোসেন পাটোয়ারী জানান, অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর স্টেশনের ৩টি ইউনিট আধাঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে করে ২৫ টি দোকান পুড়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে এবং তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।