কাপ্তাই প্রতিনিধি( রাঙ্গামাটি): “৩২১ নং রাইখালী মৌজা” যা রাঙ্গামিাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলার অর্ন্তগত । এই “৩২১ নং রাইখালী মৌজা” এর অধীনেই “রাইখালী বাজার”এ সপ্তাহে ২ দিন হাট-বাজার বসে। রবিবার এবং বৃহস্পতিবার। আজ বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক বাজারের ২ দিনের ১ দিনএবং আজকের দিনের বাজারটা সারাদিনের অর্থাৎ বড় পরিসরে তথা সম্প্রসারিত। রবিবারের টা আধাবেলা। ২নং রাইখালী ইউনিয়নের তথা ৩২১ নং রাইখালী মৌজার এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তের নানান পেশার মানুষের সমাগম ঘটে এ সাপ্তাহিক বাজারে।এই ৩২১ নং রাইখালী মৌজা ছাড়াও আশ-পাশের অন্যান্য উপজেলা/গ্রামের মানুষজন আসেন সাপ্তাহিক আজকের সারাদিব্যাপী এই বৃহৎ পরিসরের বাজারটিতে।উদ্দেশ্য,তাজা-টাটকা শাক-সবজি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহার্য্য দ্রব্য ক্রয় করা। 

উল্লেখ্য দূর-দূরান্ত থেকে পাহাড়ী বাঙ্গালী নির্বিশেষে সকলেই ছুটে আসেন আজকের বৃহস্পতিবারের দিনব্যাপী বড় পরিসরের বাজারটিতে।সকলেই তাঁদের কাঙ্খিত দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করে যে যার মত নিজ গন্তব্যে ফিরে যান।এক কথায় এ রাইখালী বাজারটি মূলতঃ পাহাড়ী অধ্যূষিত এই পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের এক সম্প্রীতির মিলন মেলা।
৩২১ নং রাইখালী মৌজার পাহাড়ী-বাঙ্গালীরা তাঁদের ক্ষেত-খামারের উৎপাদিত পণ্য/দ্রব্য সামগ্রী এই বাজারে নিয়ে আসেন। বিক্রেতারা তাঁদের কাঙ্খিত মূল্য পান,পাশাপাশি ক্রেতারাও সতেজ-টাটকা শাক-সবজি ,ফল-মূল,এছাড়া হাঁস-মুরগি,কবুতর,নানান রকম মাছ এবং দৈনন্দিন গৃহস্থালীর হরেক রকম পণ্য ক্রয় করে সন্তুষ্ট মনে নিজ নিজ বাড়ি ফিরে যান।পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীদের উৎপাদিত পণ্যের বিশাল সমাহার এই সাপ্তাহিক বাজার “রাইখালী বাজার”এ।পাশাপাশি পার্বত্য বাঙ্গালীরাও নানা পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসেন এই সাপ্তাহিক বৃহদাকার বাজার “রাইখালী বাজার”এ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,সাপ্তাহিক বাজার“ রাইখালী বাজার” মূলত ৩২১নং রাইখালী মৌজা”র অধীন।বাজার ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে সার্বিক বিষয়াদি পরিচালিত এবং নিয়ন্ত্রিত হয় এই “৩২১ নং রাইখালী মৌজা”র হেডম্যান এর সার্বিক নির্দেশনায়।বাজার সংলগ্ন অবস্থিত চন্দ্রঘোনা থানা। এই হাট-বাজারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ।বহু পুরানো এবং ঐতিহ্যবাহী এই “রাইখালী বাজার”।সপ্তাহের অন্যান্যদিন এলাকাবাসীরা পার্শ্ববর্তী অন্য ইউনিয়ন হতে প্রয়োজনীয়াদি ক্রয় করলেও এই সাপ্তাহিক বাজারটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন।উদ্দেশ্য একটাইঃ পাহাড়ী-বাঙ্গালির সম্প্রীতির মিলন মেলা আর সদ্যজাত ও উৎপাদিত কাঁচাপণ্য ক্রয় এবং যা কিনা অন্য জায়গার তুলনায় স্বল্পমূল্যে। অত্র ২নং রাইখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান,৩২১ নং রাইখালী মৌজার হেডম্যান এবং প্রশাসনের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতার দ্বারা সেই সূচনালগ্ন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি “রাইখালী বাজার” এ সপ্তাহে ২ দিন হাট-বাজার চলমানএবং আজকের দিনের বাজার(বৃহস্পতিবার)সর্ববৃহৎ পরিসরের বাজার।ক্ষুদ্র যানবাহন মালিক,শ্রমিক এই সাপ্তাহিক বাজারের দিন দূর-দূরান্ত থেকে যাত্রী পরিবহন করেন এবং এ কথা অনস্বীর্কায যে,অন্যান্য দিনের তুলনায় এই সাপ্তাহিক বাজারের দিন অত্যাধিক ভাল রোজগার হয়। তাই এই সাপ্তাহিক বাজার “রবিবার“ এবং অদ্য “বৃহস্পতিবার” এর মাধ্যমে সকল পেশার,সকল শ্রেণীর মানুষ উপকৃত হয়ে থাকেন।তাইতো কারোরই মনে কোন অসন্তোষ নেই।
সম্প্রতি মহামারী করোনার ভয়ানক ছোবলে আক্রান্ত সমস্ত বিশ্ব।অদ্যাবাধি করোনা মুক্তির প্রতিষেধক/টীকা আবিস্কৃত হয়নি। সারাবিশ্বে মহামারী করোনায় মৃত্যূর হার অত্যাধিক,পাশাপাশি করোনা রোগে আক্রান্ত/সনাক্তের হারও বেশী।তাইতো “বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা” বিশ্ববাসীকে মহামারী করোনা থেকে নিরাপদ থাকার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানিয়ে আসছেন। বাংলাদেশে র্মাচ মাস হতে করোনা সংক্রমন শুরু হয় যা এখনো অব্যাহত আছে। এ মহামারী করোনা থেকে ধনী-দরিদ্র কারোরই রেহাই মিলছে না। সুস্থতার হার আশাব্যন্জক হওয়া সত্বেও সংক্রমন এবং মৃত্যূ ঠেকানো দুরুহ হয়ে পড়েছে।গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মহোদয় শুরু থেকে অদ্যাবধি বারে বারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানিয়ে আসছেন। তিনি তাঁর আহবানে এটা স্পষ্টই বলেছেন,“যতদিন পর্যন্ত মহামারী করোনার প্রতিষেধক/টীকা আবিস্কৃত না হচ্ছে ততদিন আমরা সবাই যেন করোনা হতে রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি।স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে নিজেকে সুরক্ষিত রাখি,পরিবারকে সুরক্ষিত রাখি। তাই স্বাস্থ্যবিধি বিশেষ করে মাস্ক পরিধান করা,ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন ।“
কিন্তু অতীব দূঃখের বিষয় হল, অত্র রাইখালী বাজারের অদ্য বৃহস্পতিবারের সাপ্তাহিক হাট এর দৃশ্য দেখে বোঝার উপায় নেই যে বাংলাদেশের এ পার্বত্য অঞ্চলে করোনার ছোবল অব্যাহত আছে।বাজারে আগত সর্বশ্রেণীর মানুষের মাঝে হাতেগোনা ক’জন মাস্ক পড়লেও বাকি মানুষ দিব্যি মাস্কবিহীন হাটে ঘুরে-ফিরে নিত্য-ব্যবর্হায পণ্য ক্রয় করছেন এবং বিক্রয় করেছেন।বাজার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি পালন সম্পর্কে সচেতন করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন কিন্তু কে শোনে কার কথা। কম বেশী অনেকেই দিব্যি মাস্কবিহীন চলাচল করে নিত্যপণ্য ক্রয়-বিক্রয় করছেন। ফলশ্রুতিতে নিজের ক্ষতি তো করছেনই পাশাপাশি আশ-পাশের মানুষকে এবং তাঁর পরিবারকে করোনা ঝুঁকির মাঝে ফেলছেন।
পরিশেষে,মহামারী করোনা মোকাবেলায় রাইখালীস্থ সাপ্তাহিক বাজার “রাইখালী বাজার” এ আগত ক্রেতা-বিক্রেতা তথা সর্বসাধারণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা তথা মাস্ক পরিধান করে প্রয়োজনীয় কার্যাদি সম্পন্ন করার মাধ্যমেই করোনার ঝুঁকি থেকে নিজেকে ও পরিবারকে যেমন সুরক্ষিত করতে পারবেন তেমনি পার্শ্ববর্তী মানুষটিও নিজেকে এবং তাঁর পরিবারকে করোনায় সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হবেন বলেই সকলের অভিমত এবং প্রত্যাশা।