
হাওরের বিস্ময় হিসেবে পরিচিতি পাওয়া রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের স্বপ্নের এই সড়ক বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঘুরে দেখেছেন ফার্স্ট লেডি মিসেস রাশিদা হামিদ। রাষ্ট্রপতি পিতার পর এবার ফার্স্ট লেডি মায়ের গাড়িচালকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন হাওর উন্নয়নের অন্যতম রূপকার বড় ছেলে সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। এমপি ছেলের পাশে বসে অবাক বিস্ময়ে হাওরের নৈসর্গিক রূপ সুন্দরর্য উপভোগ করেন ফার্স্ট লেডি মিসেস রাশিদা হামিদ।
বৃহস্পতিবার(১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হাওরবাসীর স্বপ্নপূরণের বিস্ময়কর সড়কটি ভ্রমণ করেন ফার্স্ট লেডি মিসেস রাশিদা হামিদ। ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি হাওরের বুক চিরে বয়ে চলা নান্দনিক এই সড়কে অংশ নিয়েছেন ফটোসেশনে। ছেলে এমপি তৌফিক ছাড়াও পরিবারের অন্যদের সাথে গ্রুপ ফটোসেশনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করেছেন পারিবারিক অ্যালবাম।
রত্নগর্ভা মিসেস রাশিদা হামিদ পারিবারিক আবহে হাওরের বিস্ময় সড়ক ভ্রমণে হন আপ্লুত। অভিভূত ফার্স্ট লেডি যেন এমন একটি দিনের জন্যই অপেক্ষা করছিলেন এতোদিন। কেননা রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সব স্বপ্ন পূরণের পথেই যে রয়েছে তাঁর সর্বোচ্চ শ্রম-ঘাম, শক্তি-সাহস আর অনুপ্রেরণা।
রাষ্ট্রপতির মোঃ আবদুল হামিদের স্বপ্নের এই নান্দনিক সড়ককেই ঘিরে এখন হাওরে উন্মোচিত হয়েছে পর্যটন সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত। সড়কটি নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন ভাটির শার্দুল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তাঁর হাত ধরেই হাওরের বিশাল জলরাশির বুকচিরে বাস্তবায়িত হয়েছে ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক পথটির।
তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের জন্য তৈরি করা নান্দনিক এই সড়কটি এখন হয়ে ওঠেছে সৌন্দর্য্যের এক অনাবিল পর্যটন আকর্ষণের নাম। সড়কটি দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন সৌন্দর্য্য আর ভ্রমণপিপাসু বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ । হাজারো পর্যটকের পদচারণায় এখন মুখরিত হাওরের একসময়ের অবহেলিত আর প্রত্যন্ত এই জনপদ।
বাংলাদেশের কোথাও হাওরের মাঝখানে এত সুদীর্ঘ দৃষ্টি নন্দন সড়ক নেই। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ, অলওয়েদার সড়কটি দেখতে ভিড় করছেন। রাস্তার দু’পাশে থৈ থৈ পানি, আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। মেঘ আর জলের এই মনোরম মিতালির সামনে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকা, সড়কের পাশে বসে বুকভরে নির্মল বাতাস আর হাওরের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ক্ষণিকের জন্য পর্যটকদের সৌন্দর্য্যের এক লীলাভূমি পরিনত হয়।
দিগন্ত বিস্তৃত এ সড়ককে ঘিরে দুঃখ ঘুচেছে হাওরবাসীর। ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক নির্মাণের ফলে হাজারো মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে। বর্ষায় কর্মহীন অনেক মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লাভবান হয়েছেন এসব উপজেলার মানুষ এবং সব মিলিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য মানুষের।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলার হাওরাঞ্চল ইটনা-মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগের জন্য ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে অলওয়েদার সড়কটি নির্মিত হয়েছে। ৮৭৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক বদলে দিয়েছে হাওরের দৃশ্যপট। অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে সেখানকার আর্থসামাজিক অবস্থার মানুষের জীবন যাত্রার মান ও উন্নত হয়েছে।
এই অলওয়েদার সড়কটি যেভাবে একটি জনপদের অর্থনৈতিক অবস্থা বদলে দিচ্ছে তা বিষ্ময়কর। দিগন্তবিস্তৃত জলরাশি, নয়নাভিরাম সড়ক ও হাওরের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকদের ঢল নামে সেখানে। হাওর উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম এখন পরিণত হয়েছে পর্যটকদের তীর্থক্ষেত্রে এবং ভ্রমণ পিপাসুদের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে উঠেছে এই হাওর এলাকা ।