রোমান আলী শাহ’র নিজ উদ্যোগে বৈচিত্র্যময় “কৃষি ক্লাব” খামার
মোঃ আলী সোহেল, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামের মোঃ জিন্নাত আলী শাহ এর ছেলে কৃষক মোঃ রোমান আলী শাহ তার নিজ উদ্যোগে মোট ১ একর ১৪ শতাংশ জমিতে একটি বৈচিত্র্যময় ‘কৃষি ক্লাব’ খামার স্থাপন করেছেন।
তার বৈচিত্র্যময় এই খামারে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছ, কবুতর, উন্নত জাতের ছাগল ও গরুর খামার এবং পুকুর ভরা মাছ। মোঃ রোমান আলী শাহ’র নিজ উদ্যোগে উক্ত কৃষি ক্লাব খামারের এক পাশে, জাতীয় চেতনা ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বোদ্ধ হয়ে সবুজ বেষ্টনীতে চিত্রকর্মের মাধ্যমে জাতীয় মহান বিজয় দিবস সহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসের তাৎপর্য বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিভিন্ন প্রতিকৃতির চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তার এই ফসলি জমিতে। সবুজ ঘাস দিয়ে ৬ শতাংশ জমিতে খামারের পাশাপাশি বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা, রক্তিম সূর্য এবং মহান বিজয় দিবসের প্রতিকৃতি শহিদ মিনার, ঘাসের ওপর খচিত কৃষক বাঁচলে যদি দেশ বাঁচে তবে সারের দাম কমাতে হবে, মহান বিজয় দিবস, জাতীয় সংগীতের প্রথম দুটি লাইন ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ লিখা ও বিভিন্ন কারুকলার চিত্র তোলে ধরেন তার এই ‘কৃষি ক্লাব’ খামারে। এ বছর মহান বিজয় দিবস উদযাপন ২০২১ পালনে তার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
রোমান আলী শাহ এলাকার স্থানীয় কৃষকদের কথা চিন্তা করে এই কৃষি ক্লাব খামারে গড়ে তুলেছেন ন্যায্য মূল্যে অত্যান্ত কম লাভে মেডিসিন, রাসায়নিক সার, কম্পোষ্ট জৈব সার, কীটনাশক ও গরু – ছাগলের খাবার ইত্যাদির দোকান। এমনকি কৃষি ক্লাব খামারের মাধ্যমে অসংখ্য লোকের কর্মসংস্থানে সহযোগিতা করছেন।
মোঃ রোমান আলী শাহ বলেন, মোট ১ একর ১৪ শতাংশ জমিতে তিনি এই কৃষি ক্লাব খামার স্থাপন করেছি, দৃর্ঘ্য দিনযাবত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে আজকের যে অবস্থানে আছি, এ অবস্থানে আসতে আমার দীর্ঘ্য ১৯ বছর লেগেছে, এ পর্যন্ত আমার প্রতিষ্ঠানকে শতভাগ চালু করতে পারিনি। আমি এবছর এই প্রতিষ্ঠান কৃষি ক্লাব খামার শতভাগ চালু করতে পেরেছি। এই খামারে আছে সার, মেডিসিন, কীটনাশক ও গরু – ছাগলের খাবার। আমি কৃষকদের কথা চিন্তা করে সব থেকে কম লাভে অত্যান্ত ন্যায্যমূল্যে এই পন্যগুলি কৃষকদের মাঝে বিক্রি করে থাকি কারণ আমি একজন কৃষক হিসাবে অনেক ঠকেছি তাই নিজেও ঠকতে ও চাই না, অন্য সকল কৃষককে ঠকতে দিতেও চাই না। তিনি আরও বলেন, এই খামারে আছে, হাড্রোপনিক মাটিবিহীন ঘাস, কুবুতরের খামার, দেশী মুরগির খামার, ছাগলের খামার, গরু দুই ধরনের (গরু মোটাতাজা করণ ও গাভী) খামার, কম্পোস্ট জৈব সার, পেয়ারা তিন জাতের (থাই সুপার 10, 8, এবং 5), বল সুন্দরী কুল, আনার গাছ এবং উচ্চ ফলনশীল আম গাছ।
তিনি বলেন, এর পাশাপাশি দেশ প্রেমে উদ্বোদ্ধ হয়ে দেশের সম্মান রক্ষার্তে বিভিন্ন জাতীয় দিবস যেমন – একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং স্বাধীনতা দিবস ইত্যাদি দিবসে প্রতি বছরই বিভিন্ন কর্মকান্ড করে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় এবছর জাতীয় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আমার কৃষি ক্লাব খামারের উদ্যোগে বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা, রক্তিম সূর্য এবং মহান বিজয় দিবসের প্রতিকৃতি শহিদ মিনার, মহান বিজয় দিবস, জাতীয় সংগীতের প্রথম দুটি লাইন ও প্রতিষ্ঠানের লোগো এ সবগুলোই মূলত আমি নতুন প্রজন্মকে জাতীয় দিবসের তাৎপর্য ও বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করতে এবং নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করাই আমার উদ্দেশ্য, এটা দেখে কেও যদি উদ্বোদ্ধ হয় উজ্জীবিত হয় এটাই আমার সার্থকতা।
তিনি সরকারের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, আপনাদের মাধ্যমে আমি সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি। আমাদের মতো যারা খেটে খাওয়া মানুষ পরিশ্রমী মানুষ, আমাদেরকে যদি সরকার বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করতে পারেন! সরকার যদি আমকে সহযোগিতা করেন তাহলে আরও নতুন নতুন অনেক কিছু আমি এখানে করে দেখতে পারবো ইনশাআল্লাহ। আসলে একলা কিছু করা যায় না, কারো সহযোগিতা ছাড়া কোন কিছু সম্পূর্ণ করা যায় না। আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে আমি সবিনয় অনুরোধ করছি সরকার যেন আমার প্রতি সুদৃষ্টি দেয়, আমাকে সহযোগিতা দিয়ে উৎসাহ, উদ্দীপনা দেয়, আমি যেন আরও নতুন কিছু করতে পারি।