লালমনিরহাটের সেই মার্শাল আর্ট কন্যা সান্ত্বনা রানী রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার ১০ লাখ টাকার চেক পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) বিকাল ৩টায় সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত ১০ লাখ টাকার চেক সান্ত্বনার হাতে তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল (এমপি)। এ সময়ে যুব ও ক্রীড়া সচিব মোঃ আখতার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সান্ত্বনা রানী রায় লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের হরিদাশ গ্রামের কৃষক সুভাষ রায়ের মেয়ে। তিনি ইতিহাসে মাস্টার্স & এলএলবি পাস। তিনি ২০০৫ সাল থেকে মার্শাল আর্ট (কারাতেদো, তায়কোয়ান্দো) অনুশীলন করছেন। তিনি ২০১১ সালে ব্ল্যাকবেল্ট অর্জন করেন। বাংলাদেশে তায়কোয়ান্দোতে ব্ল্যাকবেল্টধারী ১০ নারীর মধ্যে তিনি অন্যতম।
চেক প্রদান করে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সৌভাগ্য যে এমন একজন ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী পেয়েছি। তিনি সবসময় আমাদের অসহায় ক্রীড়াবিদদের সহযোগিতা করে থাকেন। ক্রীড়ার উন্নয়নে আমরা যখনই যা চেয়েছি, প্রধানমন্ত্রী তা আমাদের দিয়েছেন। কিছুদিন আগে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ খেলোয়াড়দের সহায়তা করতে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। আমরা অচিরেই এ অর্থ দেশের তৃণমূল পর্যায়ের ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকদের হাতে তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রীর উপহার ১০ লাখ টাকার চেক পেয়ে তিনি জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি খুবই আনন্দিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার বিপদের সময়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। গত মার্চ মাসে আমার পারিবারিক সমস্যার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যমে জানতে পারেন। তিনি ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী স্যারকে আমার বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে বলেন। প্রতিমন্ত্রী স্যার আমাকে তার দপ্তরে ডেকে নেন। পরবর্তীতে তিনি আমার অবস্থার বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমার ধারাবাহিক এ সাফল্য অর্জনে যাঁরা আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, তাঁদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।

উল্লেখ্য যে, সান্ত্বনা ২০১১ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় আইটিএফ তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্যপদক, ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আন্তর্জাতিক তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক পান। ২০১৪ সালে এপ্রিলে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সপ্তম এশিয়ান তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে স্বাগতিক নেপালকে পরাজিত করে সান্ত্বনা স্বর্ণপদক লাভকরেন। তিনি ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় আইটিএফ তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক পান।

২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশতম বিশ্ব তায়কোয়নদো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ফেরেন ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে। ২০১৮ থেকে এখন পর্যন্ত ৫টি ঘরোয়া প্রতিযোগিতা ও দুটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ৫টি স্বর্ণ এবং একটি করে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন সংগ্রামী এ নারী ক্রীড়াবিদ। বর্তমানে তিনি আর্থিক দৈন্যতা সত্ত্বেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেয়েদের আত্মরক্ষার কৌশল তায়কোয়ানডো প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন।